ভুবন বাদ্যকর
নিজের কথায় নিজেই সুর বসিয়ে মাত্র একটি গান গেয়ে একজন অতি নিম্নবিত্ত ঘরের মানুষ রাতারাতি হয়ে গিয়েছিল সকলের পছন্দের মানুষ। আন্দাজ করতে পারছেন কার কথা বলা বলছি? হ্যাঁ এক্কেবারে ঠিক ধরেছেন ভুবন বাদ্যকর। যদিও সকলের কাছে তিনি বাদাম কাকু বলেই পরিচিত। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেলিব্রিটি সকলেই কাঁচা বাদাম গানের তালে তালে নাচ করেছিলেন ক্যামেরার সামনে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে রোজ কত মানুষই না ভাইরাল হন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মানুষের মনে চিরকালের মতো ঘর করে নেন।
কিন্তু বেশিরভাগই একসময় হারিয়ে যান স্মৃতির ভিড়ে। কিন্তু ওই যে কথাই বলে, কষ্ট না করে যে সাফল্য হাতে চলে আসে তা হয়তো বেশিদিন ধরে দেখা যায় না। নিজের পুরনো জীবনেই ফিরে যেতে হয়। এমনই এক ভাইরাল ব্যক্তিত্ব হলেন এই ভুবন বাদ্যকর। বীরভূমের দুবরাজপুরের কুড়ালজুরি গ্রামের বাসিন্দা ভুবন জনপ্রিয় হন ‘কাঁচা বাদাম’ গানের জন্য। তার স্বরচিত সেই গান শোনেননি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
বছর খানেক আগে গোটা সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছিল ভুবন কাকুর রমরমা। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সব শেষ। তার খ্যাতি, প্রতিপত্তি যেভাবে বেড়েছিল তাতে মনে হয়েছিল নিজের প্রতিভার জোরে টিকে যাবেন ভুবন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ‘বাদাম কাকু’রও অবস্থা হল রানু মণ্ডলদের মতোই। তবে কি ফের বাদাম বিক্রি শুরু করেছেন তিনি? ফের ওই এক চিলতে ঘরেই বসবাস? কেমন আছেন বাদাম কাকু জানেন? তার বর্তমান পরিস্থিতি জানলে ‘থ’ হয়ে যাবেন।
স্বরচিত গান গেয়ে ভাইরাল হওয়ার আগে পর্যন্ত একচিলতে মাটির ঝুপড়িতে ছিল তার বাস। সেখান থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল বাদাম কাকুর স্বরচিত কাঁচা বাদাম গানটি। জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন তিনি। গান পৌঁছে গেল বিদেশে। তাবড় তাবড় সেলিব্রেটিরাও সেই গানে কোমর দুলিয়েছেন। বিভিন্ন টিভি শোতে মুখ দেখানোর পাশাপাশি নামী রেস্তোরায় গান গাওয়ার সুযোগ পান তিনি। মাত্র একটি গান গেয়ে রীতিমতো কোটিপতি হয়ে যান তিনি। বাড়ি গাড়ি সব কিছুই করে ফেলেন বাদাম কাকু।
আরও খবর- ষষ্ঠী থেকে দশমীতে রাজ্যে বৃষ্টির আশঙ্কা কি রয়েছে? বড় আপডেট আবহাওয়া দপ্তরের
আজ যে রাজা কাল সে ফকির’! পুজোর আগে নিঃস্ব ‘বাদাম কাকু’, কেমন আছেন সেই ভুবন বাদ্যকর?
কিন্তু এতকিছু তার ভাগ্যে সইলনা। হঠাৎ রকেটের গতিতে সফলতা পাওয়া ভুবনের পতন ঘটতেও বেশি সময় লাগল না।
অট্টালিকা বানিয়েছেন বটে, তবে ঠিক করে সেই অট্টালিকার সুখ ভোগ করতেও পারছেন না। তার আর্থিক অবস্থা এতটাই করুণ যে, পুজোয় নতুন জামাকাপড় কেনার ক্ষমতাও নাকি তার নেই। আসলে যে খাবার কেনার টাকা জোগাড় করতেও হিমশিম খায় তার কাছে জামাকাপড় কেনা বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু না। তার গানের সত্বও এখন অন্য কারো কাছে। সংসারের যাবতীয় খরচ চলছে ছেলের রোজগার থেকেই। একজনের রোজগারে একটা গোটা সংসার চালানো কষ্টকর বলেই জানিয়েছেন তিনি।