বিহার ট্রেন দুর্ঘটনা
অনেক যাত্রী ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং কেউ কেউ আগেই ঘুমিয়ে পড়েছে। তারপর একটি শক্তিশালী সংঘর্ষে ট্রেনের যাত্রীরা তাঁদের আসন থেকে পড়ে যায়। বুধবার রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ বিহারের বক্সার রেলওয়ে রঘুনাথপুর স্টেশনের কাছে উত্তর-পূর্ব এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। চোখে মুখে আতঙ্ক, সেই আতঙ্ক নিয়ে শিলিগুড়ির এনজেপি স্টেশনে নামলেন দার্জিলিং সহ বেশকিছু এলাকার যাত্রীরা। ওই ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়া প্রায় ২৬৩ জন যাত্রী বৃহস্পতিবার এনজেপি স্টেশনে নামেন। স্টেশনে আগে থেকে যাত্রীদের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা প্রস্তুত রেখেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। খাবার থেকে শুরু করে চিকিৎসা সব ব্যবস্থা ছিল।
জানা গিয়েছে, ওই দুর্ঘটনা কারণে ট্রেনে থাকা কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও অনেক যাত্রীই কম বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের বক্সারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুরুতর আহতদের রেফার করা হয় পাটনায়। এদিন স্টেশনে নামা অনেক যাত্রীর হাত, পা-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত ছিল।
জানা গিয়েছে, নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেসে দার্জিলিংসহ পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা ছিলেন। কর্মসূত্রে তাঁদের অনেকেই দিল্লিতে গিয়েছিলেন। কেউ কেউ আবার চাকরির সুবাদে দিল্লির স্থায়ী বাসিন্দা, পুজোর ছুটিটে বাড়ি ফিরছিলেন। বুধবার দিল্লি-কামাখ্যা নর্থ-ইস্ট এক্সপ্রেসে তাঁরা ফিরছিলেন। কিন্তু বক্সারের কাছে ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রেন। এদিন এনজেপি স্টেশনে যাত্রীদের জন্য জল, খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামা এক যাত্রী বলেন, দুর্ঘটনার সময় অধিকাংশ যাত্রীই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। সেসময় ট্রেনে হঠাৎ ঝাঁকুনি হয়। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে উলটে যায় ট্রেন। উলটে যাওয়া বগিগুলিতে অনেক যাত্রী ছিলেন। আমরা খুব ভয় পেয়েছি। আমার পায়ে চোট লেগেছে। চারদিক থেকে যাত্রীদের চিৎকারের শব্দ আসতে থাকে।
আরও এক যাত্রী বলেন, ‘কর্মসূত্রে ছেলের সঙ্গে দিল্লিতে থাকি। সেখান থেকে ফিরছিলাম। দুইজন ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ ট্রেন উলটে যায়। কোনওমতে ট্রেন থেকে বাইরে বেরিয়ে আসি। ব্যাগপত্তর সব হারিয়ে গিয়েছে। এরপর হয়তো ট্রেনে উঠতে ভয় লাগবে। জানা যায়, কেউ কেউ বাইরে এসে দেখার চেষ্টা করলেও কোচের দরজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
আরও খবর- ন্যাশনাল যোগাসন চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে বাংলার হয়ে তিনটি সোনা আনল সাউথ দমদমের সুজয়
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা! এনজেপি-তে নেমে বিহার ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা শোনালেন যাত্রীরা
এনএফ রেলওয়ের কাটিহার ডিভিশনের এডিআরএম সঞ্জয় চিলওয়ার জানিয়েছেন, ‘যাত্রীদের জন্য স্টেশনে আগে থেকেই জল, খাবার রাখা হয়েছিল। চিকিৎসার ব্যবস্থাও ছিল। অনেকেই এখানে চিকিৎসকদের দেখিয়েছেন।
উল্লেখ্য, চার মাস আগে ওডিশার বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় মৃত্যু মিছিলের সাক্ষী ছিল গোটা দেশ। মৃত্যু হয়েছিল বহু মানুষের। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চিরতরে চলনশক্তি হারান অনেকে। সেই ঘটনার কয়েকমাস কাটতে না কাটতেই ফের বিহারের বক্সারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রেন।