এখন ভারত : বীরভূমের রামপুরহাটে বগটুই গ্রামের অগ্নিকাণ্ডের যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে রাজ্য পুলিশের ওপর আর ভরসা করা যাবে না। এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে শুক্রবার বগটুই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন বলে, “আমরা ওই ঘটনার বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করেছি। মামলার পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই মামলা সিবিআই-কে দেওয়া প্রয়োজন। বিচার এবং সমাজের প্রতি ন্যায়ের জন্য স্বচ্ছ তদন্ত করে সত্য সামনে আনা জরুরি।”
দিন আদালতের তরফে বলা হয়েছে, বগটুই -এর হত্যাকান্ড যে ভাবে সমাজে প্রভাব ফেলেছে, তাতে রাজ্যের তদন্তকারীদের ওপর আর ভরসা করা যাবে না। সেই কারণেই আদালত সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দিতে চায় বলে জানান প্রধান বিচারপতি। এর পাশাপাশি হাই কোর্ট এও নির্দেশ দিয়েছে, এই মামলায় রাজ্যের গঠিত সিট কোনও তদন্ত করতে পারবে না। সিবিআইকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে সিট। তাছাড়া শুধু মাত্র ‘কেস পেপার’ তৈরি করেই থেমে থাকবে না সিবিআই। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করবে এবং তদন্তের প্রয়োজনে গ্রেফতারও করবে। পরবর্তী শুনানির মধ্যে জানাতে হবে তারা তদন্ত কত দূর এগিয়েছে। জানা গিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ এপ্রিল।
রামপুরহাটের বগটুইকাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের বেঞ্চ। দায়ের হয় একাধিক জনস্বার্থ মামলাও। সব মামলা একত্রিত করে শুনানি চলে। বৃহস্পতিবারই মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল। কিন্ত রায়দান স্থগিত রেখেছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত। স্বতস্ফূর্তভাবে এই মামলা গ্রহণ করেছিল আদালত। মাত্র দুদিনের শুনানির পরই সিবিআই তদন্তের পক্ষে রায় দিল ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রামপুরহাটের বগটুইয়ের তৃণমূল নেতা তথা বড়শাল গ্রামের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পরই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা গ্রাম। কার্যত রাতভর তাণ্ডব চলে এলাকায়। একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি হিসাবে, ওই ঘটনায় আগুনে পুড়ে মারা যায় ৮ জন। তার পর থেকেই এই ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।