খালি পায়েই স্কুলে কালনার পড়ুয়ারা
EKHON BHARAT :- ছাত্র জীবনে জল কাদা পেরিয়ে স্কুলে যাওয়ার মজাটাই ছিল আলাদা। অধিকাংশ পড়ুয়ার কাছে, বর্ষাকালে এক হাঁটু জল পেরিয়ে বা কাঁদার মধ্যে হাতে জুতো নিয়ে দল বেধে স্কুলে পৌঁছানো পড়াশোনার জন্য নয় নেহাতই ছিল আনন্দের জন্য। কিন্তু এই এলাকার পড়ুয়ারা শুধু বর্ষা নয় সারা বছরই এক হাঁটু কাঁদা ডেঙিয়ে স্কুলে পৌঁছয়। সাপ কোপের ভয় তো রয়েছেই! তাই তাদের কাছে এটা আনন্দ নয় চরম কষ্টের! তাই স্কুলেও যেতে চায় না পড়ুয়ারা।
স্কুল পড়ুয়াদের এই কষ্ট দেখে আপনিও নিশ্চয়ই একটু রেগেই উঠলেন ! যদিও এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। তবে আরও আশ্চর্য হবেন যে, যেখানে রাজ্য জুড়ে উন্নয়নের এত তৎপরতা, সেখানে বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া সত্ত্বেও মেলেনি বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা। বছরের পর বছর এমনই দুর্ভোগ পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার হাটকালনা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নিউ মধুবন এলাকায় নিউ মুধুবন প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের।
স্কুলে আসতে হয় দুর্গম রাস্তা পেরিয়ে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রী থেকে স্কুল শিক্ষিকা ও অভিভাবক এলাকাবাসীদের। স্কুলে যাওয়ার সময় এতটাই খারাপ রাস্তার উপর দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের যেতে হয় যে, জুতো পরে কোনমতেই যাওয়া সম্ভব নয়। তাতে জুতোটাই হারাবে। বাধ্য হয়ে শিক্ষা অর্জনের জন্য খালি পায়ে এক হাঁটু জল, খারাপ রাস্তা তারপর আরো মারাত্মক চারদিকে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এক হাঁটু পাক পেরিয়ে তবেই তাদের প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয়। চারদিকে জঙ্গল জন্য সাপের ভয় আছে। বলা ভালো পড়াশোনা শেখার জন্য রীতিমত প্রাণ হাতে করে স্কুলে পৌঁছাতে হয় তাদের। তাই বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীকে তাদের অভিভাবকরা পরিবার স্কুলে আসতে দিতে চায় না।
আরও খবর- পৃথিবীতেই রয়েছে এক আশ্চর্য গ্রাম যেখানে চার হাত-পায়ে হেঁটে বেড়ায় মানুষ
স্কুলে যাওয়ার রাস্তা নেই , জল-কাদা পেরিয়েই স্কুল , অগত্যা খালি পায়েই স্কুলে যায় কালনার পড়ুয়ারা
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানান, স্কুলের ছাত্র সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেত। কিন্তু স্কুলে পৌঁছানোর একমাত্র রাস্তা এতটাই খারাপ যে, প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আসতে দিতে চায় না অভিভাবকরা। ফলে নতুন করে কোন ছাত্র-ছাত্রীও এই স্কুলে ভর্তি হচ্ছে না। ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বহুবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার সত্বেও এখনও পর্যন্ত মেলেনি কোনও সুরাহা। এমনটাই অভিযোগ প্রধান শিক্ষিকার।
তার ওপর আবার রাজ্যজুড়ে যেভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ দিন দিন বেড়ে চলেছে, তাতে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতেই আতঙ্কিত অভিভাবকরা। এক কথায়, এক যুগ ধরে পড়ুয়ারা পড়াশোনা শিখতে যেভাবে স্কুলে পৌঁছেচ্ছে তাতে তাদের এই কষ্টকে স্যালুট জানাতে হয়। তবে শীঘ্রই রাস্তা তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও। এখন দেখার তৈরি হয় রাস্তা।