মুরসালিম ছোট্ট বালক
EKHON BHARAT :- মুরসালিম। এই নামটা এখন আর কারো কাছে অপরিচিত নয়। হ্যাঁ এই সেই বালক মুরসালিম, রেললাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সে দেখতে পেয়েছিল তাতে রয়েছে গভীর একটি গর্ত। এরপর কাল বিলম্ব না করে এমনকি নিজের জীবনের পরোয়া না করে পরনের গেঞ্জি খুলে সেটি দেখিয়ে দাঁড় করায় একটি ট্রেনকে। দ্রুত গতিতে ছুটে আসা ট্রেনটিকে দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচাতে ছোট্ট বালক দূর হতে শুরু করে ট্রেনের মুখোমুখি! এই খুদের তৎপরতায় সেদিন বেঁচে গিয়েছিল কয়েকশো ট্রেন যাত্রীর জীবন।
এই ছোট্ট খুদের উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। এরপরই মালদহের ষষ্ঠ শ্রেণীর সাহসী বালক মহম্মদ মুরসালিম রাতারাতি হয়ে ওঠে রিয়েল লাইফ হিরো। নিমিষী তারই সাহসিকতার খবর পৌঁছে যায় রেল দপ্তরে। এই সাহসিকতার পুরস্কার স্বরূপ উত্তর-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ মুরসেলিমকে দিল ১ হাজার ৫০০ টাকা ও একটি শংসাপত্র।
সাহসিকতার পুরস্কার হিসেবে এই পনেরশো টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রেলের এই বিবেচনা রীতিমতো হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে। অনেকে স্পষ্ট জানিয়েছেন, রেল ইঁদুর মারার জন্যই খরচ করছে ৭০ লাখ টাকা। হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে একটি ইঁদুর মারার জন্য বছরে প্রায় ৪১ হাজার টাকা খরচ করছে রেল। অথচ এই বয়সে যে বালক কয়েকশো মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে দিল তাকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হল মাত্র পনেরশো টাকা!
আরও খবর- Z- A উল্টোদিকে মাত্র ৩০ সেকেন্ডে ৮ বার বলে এশিয়া বুক অফ রেকর্ড জয় সংস্থিতার
নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না করে বাঁচিয়েছিল কয়েক’শো যাত্রীকে, সেই সাহসী খুদেকে মাত্র ১৫০০ টাকা পুরস্কার রেলের!
তবে পুরস্কার দিয়ে দায়ভার ঝেড়ে ফেলল রেল? ক্ষোভের সঙ্গে এমনটাই প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষের একাংশ। জানা যায়, মুরসালিমের বাবা পরিযায়ী শ্রমিক। মা বিড়ি বাঁধার কাজ করেন। থাকার জন্য মাথার ওপর নেই পাকা ছাদ। তা সত্ত্বেও ছোট্ট মুরসালিম নিজের জীবনের পরোয়া না করে রেললাইনের উপর দাঁড়িয়ে দ্রুত গতিতে ছুটে আসা একটি ট্রেন থামাতে পিছপা হয়নি।
মুরসালিমের আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীরা বলছেন, রেল যে এভাবে সামান্য টাকা দিয়ে নিচু মানসিকতার পরিচয় দেবে আমরা ভাবতে পারিনি। অনেকে ভাবছিল রেল সাহায্য করলে হয়তো কিছুটা হলেও সংসারের হাল ফিরতে পারে মুরসালিমদের। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিল রেল।