এখন ভারত : প্রতিদিন চলার পথে দূরে কোথাও ভ্রমন করতে গেলে কত রেলস্টেশন চোখে পড়ে। কোনোটি ঝা চকচকে, কোনটি যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্য বহন করে চলেছে আবার কোনওটি বা একেবারে সাদামাটা। কিন্তু যাই হোক না কেন রেল স্টেশনটি পেরিয়ে গেলেই তার সম্পর্কে আমরা জানার কোন কৌতুহল প্রায় কারো মধ্যেই থাকে না বললেই চলে।
এমনই একটি রেলস্টেশন হল পূর্ব বর্ধমানের খানা জংশন। এই রেল স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। গুরুত্বপূর্ণ জংশন হওয়ার পাশাপাশি সেখানকার মানুষদের কাছে খানা স্টেশনটি অত্যন্ত গর্বেরও বটে। বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন থামে এই জংশনে। হাওড়া-জয়নগর এক্সপ্রেস, বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার, হাওড়া-মোকামা এক্সপ্রেস স্টপেজ দেয় এই খানাতে।
কিন্তু এই স্টেশনের ইতিহাস সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল নয়। রেল দফতর সুত্রে জানা যায়, পূর্ব রেল বর্তমানে এই স্টেশনটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। এই জংশনের স্টেশন কোড KAN। দক্ষিণবঙ্গের সবথেকে পুরনো জংশন স্টেশন হল এই খানা। ১৮৫৯ সালে এই স্টেশনটি জংশনের তকমা পায়।
টেগোর অ্যান্ড কোম্পানি দামোদর নদীর নারায়ণকুড়ি ঘাট থেকে কলকাতায় কয়লা পরিবহন করত উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়। কিন্তু দামোদর নদীর অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রবাহ এই পরিবহনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কলকাতা এবং হুগলির মধ্যে রেলপথ প্রসারিত করে রানীগঞ্জ পর্যন্ত।
এরপর ১৮৫৯ সালে হাওড়া-দিল্লিকে মেন লাইন হিসাবে বিবেচিত করা হয়। ঠিক সেই সময় খানা স্টেশন জংশনের তকমা পায়। এরপরই খানা জংশন- রাজমহল লাইন নির্মাণের কাছ শুরু হয়। রেলপথের মাধ্যমে কলকাতা ও দিল্লি সরাসরি যুক্ত হয় ১৮৬৬ সালে। এই স্টেশনটি হাওড়া, শিয়ালদা স্টেশনের আগে তৈরি হয়েছে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হল, দেখতে দেখতে ১৬৫ বছর পেরিয়ে গেলেন জনপ্রিয়তার দিক থেকে খানা জংশন আজও পিছিয়ে রয়েছে।