সিকিমের ভয়াবহ বিপর্যয়ের ছবি
EKHON BHARAT :- সিকিমের ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর থেকে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে দেখা যায়, এক ব্যক্তি গাছে উঠে মগডাল ধরে জাপটে বসে রয়েছেন। নীচে দিয়ে সর্বগ্রাসী তিস্তা ফনা তুলছে। এই ছবি দেখে শিউরে উঠেছিলেন অনেকেই। টিভির পর্দায় সেই ছবি দেখে পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে পেরে বুক কেঁপেছে প্রায় প্রত্যেকেরই। সবাই প্রার্থনা করেন যাতে তিনি সুস্থ থাকেন। কিন্তু কে ওই ব্যক্তি?
সূত্রের খবর, তিনি হলেন শিলিগুড়ির মহারাজা কলোনির বাসিন্দা মহম্মদ মুক্তার। শিলিগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। কর্মসূত্রেই ২ মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়ে তিনি সিকিমে থাকতেন। ভয়ংকর সেই রাতের কথা জানাতে গিয়ে কান্নায় যেন আর কথা বলতে পারছিলেন না সন্তানহারা বাবা।
তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সিকিমের রংপোতে টিনের চালের ছোট্ট বাড়িতে থাকতেন তিনি। অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছিল রাতে। কাছেই তিস্তা। ক্রমশই ফুঁসছিল নদী। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছিল জ্বলস্তর। বিপদ দোরগোড়ায় বুঝতে পেরেই ছেলে মেয়েদের ঘুম থেকে জাগিয়ে দেন তিনি। এরপর তাদের নিয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন।
প্রবল স্রোতে চারদিক তখন উথালপাথাল।ষ সেই মুহূর্তে কি করবেন কিছু বুঝতে না পেরে তাড়াতাড়ি ছেলেকে টিনের চালে তুলে দেন তিনি। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কিছুই বুঝতে পারছেন না তিনি। কখন যে হাত ছেড়ে গিয়েছে মেয়েদের। আর তাদের খোঁজ নেই। ছেলেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু তিস্তার শক্তির কাছে দাঁড়ায় কার সাধ্য! ওই ভয়ঙ্কর তিস্তার হাত থেকে বাঁচানো কী মুখের কথা! চোখের সামনে টিনের ঘরটাকে টেনে নিয়ে গেল তিস্তা। তিস্তার ঘূর্ণি স্রোত টেনে নিল ছেলেটাকেও। মুহূর্তেই চোখের সামনে সব শেষ।
আরও খবর- শুধুই রণবীর নয় , এবার সমন পাঠানো হল কপিল শর্মা, হুমা কুরেশি ও হিনা খানকে
চোখের সামনে দেখলাম তিস্তায় ভেসে গেল ছেলে মেয়েরা, সিকিমে ৬ ঘণ্টা গাছে আশ্রয় অসহায় বাবার
একলা নিঃস্ব মুক্তার জড়িয়ে ধরলেন একটা গাছকে। নীচে নদী। সেই নদী গিলে খেয়েছে তাঁর সন্তানদের। নিখোঁজ দুই মেয়ে। প্রায় ৬ ঘণ্টা তিনি গাছ ধরে বসে ছিলেন। বুধবার দুপুরে তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তবে নিথর দেহ। এখনও পর্যন্ত মেয়েরা নিখোঁজ। চোখের সামনে সব শেষ। সন্তানদের বাঁচাতে কিছুই করতে পারলেন না। তিস্তার শক্তির কাছে হেরে গেল পিতৃ স্নেহ। স্ত্রী বিহারে চলে যাওয়ার পরে সন্তানদের আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকতেন মুক্তার। তারাই ভেসে গেল তিস্তায়। একবুক শূন্যতা নিয়ে বুক চাপড়াচ্ছেন বাবা।