এখন ভারত : গাছের কান্ডে সঞ্চিত রয়েছে জল। শুনেই অবাক হচ্ছেন তো? তবে এতটাও আশ্চর্য হবেন না। পৃথিবীতে সত্যিই এমন গাছের অস্তিত্ব রয়েছে যার কান্ডের সঞ্চিত থাকে জল।
বাওবাব নামের একটি গাছ রয়েছে পৃথিবীতে যার কান্ডের সঞ্চিত থাকে প্রচুর জল। হিন্দিতে এই গাছ গোরক্ষী নামেও পরিচিত। এই গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম হল অ্যাডানসোনিয়া ডিজিটাটা। এছাড়াও বব বোতল গাছ উল্টানো গাছ বোবোয়া হিসেবেও আঞ্চলিকভাবে পরিচিতি রয়েছে এই গাছের। আরবিতে আবার বু হিবাব বলা হয় এই গাছকে। আবার বাওবাব গাছটির আফ্রিকায় the world tree নামে পরিচিতি রয়েছে।
বাওবাব গাছ তার কাণ্ডে প্রায় ১,১৭৩৪৮ লিটার জল ধরে রাখতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই কারণে এই গাছটিকে জীবনদানকারী গাছও বলা হয়।
এবার প্রশ্ন হল কোথায় দেখা মেলে এই গাছের? মূলত শতাব্দী প্রাচীন বাওবাব গাছ রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের মাদাগাস্কারে। আফ্রিকার শুষ্ক অঞ্চল গুলিতেই দেখা যায় এই গাছ।
মাদাগাস্কারে এফেট্টি নামের একটি শহর রয়েছে, যেখানে আনুমানিক বারোশো বছরের একটি বাওবাব গাছ রয়েছে, যে গাছের নাম দেওয়া হয়েছে একটি টি পট বাওবাব। হিবাস্কাস বা ম্যালো পরিবারের নটি পর্ণমোচী প্রজাতির মধ্যে একটি প্রজাতির গাছ হলো এটি। এই প্রজাতির গাছ রয়েছে অস্ট্রেলিয়াতেও। এই গাছের ছটি প্রজাতি রয়েছে মাদাগাস্কারে।
এই গাছে লাল হলুদ সাদা সহ বিভিন্ন রঙের ফুল দেখা যায়। বাওবাব গাছকে দেখলে মনে হয় অনন্য এই গাছটির কাণ্ড রয়েছে নিচে আর শিকড় রয়েছে উপরে।
আসুন এবারে এই গাছের উপকারিতার বিষয় জেনে নেওয়া যাক-
এই গাছের পাতা ভোজ্য হয়। এই গাছের ফল থেকে এক ধরনের সতেজ পানীয় তৈরি হয়। আর এই পানীয় ব্যবহৃত হয়, ওষুধ তৈরির কাজে। এই গাছের ছাল থেকে প্রাপ্ত ফাইবার দিয়ে দড়ি কাপড়ও তৈরি করা হয়। এছাড়াও এই গাছের সাথে ধর্মীয় ভাবাবেগ জড়িয়ে আছে।
বর্তমানে পরিবর্তিত জলবায়ু এই গাছের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ইতিমধ্যেই আফ্রিকায় 13 টি প্রাচীনতম যে গাছ ছিল তার মধ্যে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে নটি। এই ধ্বংসের সূত্রপাত ২০০৫ সাল থেকে। আফ্রিকায় এই প্রজাতির ছটি বৃহত্তম গাছের মধ্যেও ইতিমধ্যেই পাঁচটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
অদ্ভুত দর্শন বাওবাব গাছে পাঁচটি পাপড়ি বিশিষ্ট ফুল দেখা যায়। 6মাস পাতা থাকে এই গাছে ।এই গাছের বিষয়ে জানার আগ্রহ রয়েছে বহু মানুষের। তবে আজ এতগুলি বাওবাব গাছ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে।