এখন ভারত : করোনার করাল গ্রাস থেকে বিশ্ববাসী অনেকটাই মুক্ত হতে পেরেছে। যদিও এতদিন বিধিনিষেধের মধ্যে চলছিল নানা অনুষ্ঠান পালন। তবে এ বছর যেকোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন বেশ সমারোহ করেই হবে। কারণ সাধারণ মানুষ এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে। তাই আর দিন কয়েক পরেই নববর্ষ উপলক্ষে প্রত্যেক এইযে ভরপুর আনন্দে মেতে উঠবেন তা আর বলার অপেক্ষা। আনন্দ উৎসব মানেই কব্জি ডুবিয়ে ভুরিভোজন। কিন্ত সাবধান হয়ে যান। না হলেই ফাঁকা হয়ে যেতে পারে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া সঙ্গে ব্যাংক একাউন্ট ফাঁকা হওয়ার কি সম্পর্ক?
সম্প্রতি এমনই এক ঘটনার শিকার হয়েছেন কলকাতার ১২ জন বাসিন্দার। কারণ এঁরা প্রায় সকলেই নববর্ষের দিন খাওয়ার জন্য বেশকিছু বিজ্ঞাপণ বা লিঙ্কগুলি তাদের ফোনে এসেছিল। এরপর তাতে ক্লিক করে নিজের বা পরিবারের সদস্যদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। লালবাজার সূত্রের খবর, গত ১৫ দিনে এই ধরনের প্রায় ১২টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে যে কোন উৎসব এমনকী নববর্ষের আগেও খাবারের নামে এই প্রতারণা চক্রগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
ঠিক কী করেছিল প্রতারকরা?
পুলিশ সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে এক ব্যক্তি লালবাজারে এসে অভিযোগ জানান তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। অভিযোগ তদন্তে নামে পুলিশ। জানা যায়, ওই ব্যক্তি এমন একটি লিঙ্কে ক্লিক করেছিলেন যার মাধ্যমে সেই ব্যক্তির ফোন হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। লিঙ্কটি অনেকের ফোনে গিয়েছে। ওই লিংকে অফার দিয়ে বলা হয়েছিল, মাত্র ৪৫ টাকায় পেটভরে লুচি, ছোলার ডাল, পোলাও, খাসির মাংস, চাটনি আর মিষ্টি খাওয়ানো হবে। এমন লোভনীয় অফার দেখে ওই লিংকে গিয়ে তথ্য ঘাঁটাঘাটি করে তিনি আরও জানতে পারেন, প্রচুর মানুষ নিজেদের নাম নথিভুক্ত করিয়েছে। তাই প্লেটপ্রতি দাম ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সস্তায় লোভনীয় খাবার হাতছাড়া করতে কেউই চান না। সেইমতো তড়িঘড়ি নাম নথিভুক্ত করান প্রতারিত ব্যক্তি। তারপরই তিনি দেখতে পান তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৫ টাকা কাটা হয়নি। কাটা হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। সঙ্গে সঙ্গে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁর। লালবাজারের দ্বারস্থ হন তিনি। তখনই জানতে পারেন, ১৫ দিনে ১২ জন ব্যক্তি এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার পাশাপাশি শহরতলিতেও ছড়িয়ে রয়েছে এই প্রতারণা চক্র। পুলিশের তরফেও বারবার সতর্ক করে বলা হচ্ছে এধরনের লিঙ্ক এ গিয়ে প্রতারকদের ফাঁদে পানা দেওয়ার।