কলকাতায় অনুব্রত, সিবিআই তলবের দিনই ফের অসুস্থ হয়ে এসএসকেএম-এ

Follw Us Now

এখন ভারত : গরুপাচার কাণ্ডে বেশ কয়েকবার তাঁকে তলব করেছে সিবিআই। প্রতিবারই হাজিরা এড়িয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সামনে খাড়া করেছেন অসুস্থতাকে। আর রক্ষাকবচের জন্য দ্বারস্থ হয়েছেন আদালতের। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন অগ্রাহ্য করে বুধবার সকাল ১১টার সময় তাঁকে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এবার সিবিআই হাজিরা না দিয়ে কড়া পদক্ষেপ হতে পারে তাঁর বিরুদ্ধে। একথা হুঁশিয়ারির সঙ্গে আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু এবারও ঠিক একই কান্ড ঘটল। সিবিআই-এর মুখোমুখি হওয়ার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন অনুব্রত। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল এসএসকেএমে। উডবার্নের ২১১ নম্বর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অনুব্রতকে। সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে তাঁর। নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে যাওয়ার কথা ছিল অনুব্রত মণ্ডলের। বুধবার সকালে চিনার পার্কের বাড়ি থেকে বেরন তিনি। তার আগে ব্যক্তিগত আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল নেতা। 

অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী সঞ্জীবকুমার দাঁ বলেন, “দাদা তো কলকাতায় এসেছেন সিবিআইয়ের সঙ্গে দেখা করতেই। কিন্তু হঠাৎ আজ সকাল থেকে তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দাদা সিবিআইকে সাহায্য করতে চান। তাঁর অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই।” 

আচমকাই অনুব্রত মণ্ডলের কলকাতা সফর ঘিরে জল্পনার পারদ চড়ছে। অনেকেই মনে করছেন সিবিআই হাজিরা দিতেই অনুব্রত কলকাতায় এসেছেন। অনেকের দাবি, চিকিৎসার জন্য তিনি কলকাতায় এসেছেন। 

বগটুই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে চাপে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বারবার এই ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ছে। অনুব্রত মণ্ডের মদতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিজেপির প্রতিনিধিদল বগটুই পরিদর্শন করে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট জমা দিয়েছে তাতে অনুব্রত মণ্ডলের নাম রয়েছে। এমনকী, মৃৃত নাজমা বিবির স্বামীও অনুব্রত মণ্ডলের নাম করেছেন। এর পাশাপাশি এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আনারুল হোসেনও অনুব্রত মণ্ডলের নাম করেছিলেন। একই দাবি তৃণমূল কংগ্রেস ব্লক সভাপতিরও। 

এদিকে এই পরিস্থিতিতে গরুপাচার কাণ্ডের তদন্তে তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে সিবিআই। গরু পাচার মামলায় ধৃতদের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের যোগসূত্র খুঁজে পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তা নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তাঁরা। কারণ অভিযুক্ত ও একাধিক সাক্ষী এই মামলায় জেরায় অনুব্রতর নাম নিয়েছেন। অনুব্রত মণ্ডলকে হাজিরার চিঠি আগেই পাঠানো হয়েছিল। এর আগে সিবিআই নোটিস পাঠালেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বোলপুর থেকে কলকাতায় এসে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায় সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে দাবি অনুব্রত মণ্ডলের। বোলপুরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতার কথাও জানান। তবে পালটা যুক্তি হিসেবে সিবিআইয়ের আইনজীবীরা জানান, অসুস্থ শরীর নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে জেলার বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে হাজির হতে দেখা যাচ্ছে। শুধু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে হাজিরা দিতেই অসুবিধা? এই প্রশ্নও তোলা হয় সিবিআইয়ের তরফে। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর ১১ মার্চ অনুব্রত মণ্ডলের রক্ষাকবচের আর্জি খারিজ করে হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। এরপর বুধবার তাঁকে তলব করেছিল সিবিআই।

ট্রেন্ডিং খবর