পুলিশের কনস্টেবলের চাকরিও দুর্নীতি
EKHON BHARAT :- পুলিশের কনস্টেবলের চাকরিও দুর্নীতির বাইরে নয়। এই পদে নিয়োগেও অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এই নিয়ে মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। সেই মামলায় বিরাট সিদ্ধান্ত নিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। এবার গোটা প্যানেল বাতিল করে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রায় ৮৪১৯ জন কনস্টেবলের নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল। এই মামলায় এদিন নয়া নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, চাকরি চলে যেতে পারে কয়েকশো কনস্টেবলের। হাইকোর্টের নির্দেশে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ৮৪১৯ পদে নিয়োগের নতুন প্যানেলও।
প্রসঙ্গত রাজ্য সরকারের তরফে ২০১৯ সালে রাজ্য পুলিশে কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। জানা যায়, পুলিশের চাকরির ইন্টারভিউয়ের আগেই কিছু পরীক্ষার্থীর হোয়াট্সঅ্যাপে জানতে পারেন কারা ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকবেন, কারা প্রশ্ন করবেন, সেই সব তথ্য। এমনকী, মেধাতালিকা প্রকাশের পরও দেখা যায় বেশ কিছু অনিয়ম রয়েছে। ফলে ২০২২ সালে স্টেট ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল ৮,৪১৯ জন পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগকে।
আরও পড়ুন –রাস্তায় হেঁটে-চলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মনুষ্যাকৃতি ডেঙ্গি মশা, ভিড় জমাচ্ছেন জনতা
কনস্টেবল নিয়োগেও দুর্নীতি! ৮৪১৯ পদে নিয়োগের প্যানেল বাতিল করে দিল হাইকোর্ট, তোলপাড় রাজ্যে
মামলাকারীদের দাবি ছিল, পুলিশে নিয়োগের চাকরিতে দুর্নীতি হয়েছে, তাই গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটাই খারিজ করতে হবে। পাশাপাশি, সংরক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আলাদা তালিকাও প্রকাশ করতে হবে। স্টেট ট্রাইব্যুনাল আদালতে এই অভিযোগ জানিয়ে দায়ের করা হয় মামলা। এরপরই রাজ্যের তালিকা খারিজ করে ট্রাইব্যুনালের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, যারা সংরক্ষিত শ্রেণির প্রার্থী নয় তাদের জন্য আলাদা তালিকা বানাতে হবে চার সপ্তাহের মধ্যে।
এদিকে সংরক্ষিত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত প্রার্থীদের অভিযোগ, কিছু পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পেলেও ইন্টারভিউতে প্রচুর নম্বর পেয়েছে। এর পরেই প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় মেধা তালিকা। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সংরক্ষণের নিয়ম মেনে সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়। নতুন করে চাকরিও পান অনেকে। কিন্তু বুধবার কলকাতা হাই কোর্ট এই দ্বিতীয় তালিকাটি খারিজ করে প্রথম তালিকাটিকেই মান্যতা দিয়েছে। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে স্যাট বা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা-ও খারিজ করেছে।
এদিন প্রধান বিচারপতির টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্রাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছে, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ রাজ্য পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড যে প্যানেল প্রকাশ করেছিল তা অপরিবর্তিত থাকবে। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ খারিজ করা হয়। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের ফলে যেহেতু নিয়োগ স্থগিত হয়েছিল তাই সিনিয়রিটির ভিত্তিতে নিয়োগ করতে হবে। এর পাশাপাশি নির্দেশে এও জানানো হয়েছে , যে ১৭০ জনকে ইতিমধ্যে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাদের চাকরি বাতিল না করে অন্যত্র চাকরিতে নিযুক্ত করতে হবে।