Ekhon Bharat Desk: গঙ্গা নদী ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র বলে বিবেচিত। গঙ্গা যে কেবল সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় তাৎপর্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তা নয়। এই দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ সরাসরি গঙ্গার উপর নির্ভরশীল হয়ে জীবন যাপন করেন। তাই এই নদীকে যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে তোলা যায় তবে বিপুলসংখ্যক মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় দেশের একাংশ মানুষ এই বিষয়ে চরম উদাসীন। বেশ কিছু জায়গার মতো এর জ্বলন্ত প্রমাণ হাওড়া স্টেশন লাগোয়া এলাকা।
হাওড়া স্টেশন লাগোয়া এলাকায় অনেক খাবারের দোকান এবং হোটেল রয়েছে। সে সব খাবারের দোকান ও হোটেলগুলি থেকে প্রতিদিন অপরিশোধিত তরল বর্জ্য নির্গত হয়ে ক্রমাগত মিশছে গঙ্গায়। তার ফলে ক্রমশ দূষিত হচ্ছে গঙ্গা। এনিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশকর্মীরা। প্রশাসনের তরফ থেকে সরকারি নির্দেশ মতো গঙ্গাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সারা বছর নানান উদ্যোগ নেওয়া হয়। এখানে অবশ্য ভিন্ন ছবি ধরা পড়েছে।
বরের ডিজাইন করা ‘এলইডি লেহেঙ্গা’ পরে গ্র্যান্ড এন্ট্রি কনের! নেট দুনিয়ায় ‘ভাইরাল’ ভিডিও!
এই বিষয়ে পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, এই সব হোটেল এবং খাবারের দোকানগুলি ন্যূনতম পরিবেশবিধি মানছে না, আর তারফলেই দূষণ বাড়ছে। তরল বর্জ্য পরিশোধন করার জন্য সেখানে প্লান্ট রয়েছে। কিন্তু ওই সমস্ত খাবারের দোকান এবং হোটেলগুলির নিকাশী ব্যবস্থার তরল বর্জ্য পরিশোধন প্লান্টের সঙ্গে সংযোগ নেই। গঙ্গা দূষণ রোধে তাই জাতীয় পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। একই সঙ্গে অনেক খাবারের দোকান এবং হোটেলের ক্ষেত্রে পর্ষদের অনুমোদন নেই বলে অভিযোগ তোলেন মামলাকারী। সেই সংক্রান্ত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। এনিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।
এই সংক্রান্ত মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছে জানিয়েছে, ওই এলাকায় কতগুলি হোটেল এবং খাবারের দোকানের নিকাশি ব্যবস্থা বর্জ্য পরিশোধন প্লান্টের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে? সে বিষয়ে শীঘ্রই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কোন কোন হোটেল পরিবেশ বিধি মানছে না অথবা কাদের কাছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমোদন নেই সমস্ত বিষয়টিও রিপোর্টে উল্লেখ করতে বলে পড়া নির্দেশ জাতীয় পরিবেশ আদালতের। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।
পনির লবাবদার, পোলাও থেকে রসগোল্লা ! জি২০র ভোজে লাইমলাইট কাড়ছে যেসব পদ…
প্রসঙ্গত, এই এলাকায় যে সমস্ত হোটেলে এবং খাবারের দোকানে গজিয়ে উঠেছে অনুমোদনহীন সেই সব হোটেল এবং খাবারের দোকানগুলি বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখি তারপরও সেখানে অনেকেই রমরমিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে দূষিত তরল বর্জ্য গঙ্গায় মিশছে।
তবে শুধুমাত্র গঙ্গা দূষণই নয়, এর ফলে মানুষের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। কারণ বহু দোকান ও হোটেল রাস্তার পাশে তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে হোটেল ও খাবারের দোকানে ভিড়ের কারণে মানুষের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। অভিযোগে একথা উল্লেখ করেছেন সুভাষ দত্ত।
গলার স্বরেই করা যাবে ইউপিআই পেমেন্ট, নয়া পরিষেবা এনপিসিআই-এর
এদিকে, এই মামলায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ছাড়াও রাজ্য সরকার, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর, পরিবেশ দফতর, হাওড়া পুরসভা, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর, ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা-সহ বিভিন্ন পক্ষকে মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সংসদে প্রবেশের পর নিজের ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, মা গঙ্গার সেবা করাই আমার ভাগ্যের লিখন। গঙ্গা দূষণ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকার নমামি গঙ্গে প্রকল্প গ্রহণ করে। এই প্রকল্পের অধীনে গঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলি উন্নয়নে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে গঙ্গার দূষণ রোধে নেওয়া হয় একাধিক পরিকল্পনা। কিন্তু অনেকের মতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাস্তব ছবিটা আমাদের চরম ব্যর্থতা আর লজ্জার দিকটাই তুলে ধরে।