এখন ভারত : ভারতীয় রেল হল বিশ্বের বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে অন্যতম। কাজেই সুদূর বিস্তৃত এই পরিষেবার যে কত অজানা কাহিনী রয়েছে, তার অধিকাংশই হয়তো আমাদের জানা নেই। এ কথা আমাদের সকলেরই জানা যে, সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী দেশের মধ্যে কোথাও ভ্রমণ করার সময় ভারতীয় নাগরিকদের পাসপোর্ট- ভিসার মতো ডকুমেন্টেসের প্রয়োজন হয় না। তবে দেশের মধ্যে এমন একটি রেলস্টেশন রয়েছে, যেখানে ভ্রমণের জন্য আপনার এই নথিগুলি থাকা আবশ্যক। অর্থাত আপনি যদি ভারতের এই রেল স্টেশনে নামতে চান তাহলে আপনার সাথে অবশ্যই রাখতে হবে এই নথিগুলি, নাহলে পড়তে হবে মহা বিপদে। পাসপোর্টের সাথে সাথে থাকতে হবে বৈধ ভিসা। জানতে চান স্টেশনটার নাম? কেনই বা এই নিয়ম প্রচলন?
স্টেশনটি হলো আটারি রেলওয়ে স্টেশন ওরফে আটারি শাম সিং রেলওয়ে স্টেশন। অমৃত মহোৎসবের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে রেলের এই বিষয়টি সামনে আনা হয়েছিল। ভারত এবং পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অমৃতসরে অবস্থিত এই স্টেশন। এই দুই দেশের মধ্যবর্তী বোর্ডের হলো আটারি ও ওয়াঘা আর এইখানেই পরিষেবা দেয় এই স্টেশনটি।
এই স্টেশনটি ভারতীয় রেলের ফিরোজপুর ডিভিশনের অন্তর্গত। জানা যায়, আটারি রেলস্টেশনে প্রবেশ করতে হলে পাকিস্তানি ভিসা লাগে। যদি কোনও নাগরিক ডকুমেন্টস না নিয়ে এই স্টেশনে ঢোকেন, সেক্ষেত্রে তাঁকে সন্দেহভাজন হিসাবে গ্রেফতারও করা হতে পারে। এমনকি তাকে জেলের ঘানিও টানতে হতে পারে। আগে এই দুই দেশের মধ্যে চলত সমঝোতা এক্সপ্রেস যাকে এই আটারি স্টেশন থেকেই ফ্ল্যাগ অফ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্ক অবনতির কারণে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে এই ট্রেনের চাকা।
আটারি স্টেশনটি পাকিস্তানের সীমান্তে অবস্থিত হওয়ায় সব সময় কড়া নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরা থাকে। এই স্টেশনের সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা সামরিক বাহিনী বারংবার যাত্রীদের চেকিং করেন। তাছাড়া এই স্টেশনে নামলে আপনি কোনো কুলির দেখা পাবেন না। তাই নিজের মালপত্র নিজেকেই বইতে হবে। অমৃতসর-লাহোর লাইনে ভারতের অন্তিম রেল হলো এই আটারিই।
উল্লেখ্য, ভারত পাকিস্তান বর্ডার অঞ্চল অত্যন্ত স্পর্শকাতর। মূলত সেই কারণেই সীমান্তবর্তী এই রেল স্টেশনে প্রবেশ করার জন্য দরকার বৈধ ভিসা এবং পাসপোর্ট। অন্যদিকে, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই সামরিক বিভাগ এই স্টেশনের উপর এত নজর দেয়, কারণ এটি হল ভারত ও পাকিস্তানের প্রবেশদ্বার।