এখন ভারত : এই জঙ্গলের আনাচে কানাচে সাইন বোর্ডের আকারে ঝোলানো রয়েছে আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকার নানা পরামর্শ বা সতর্কবার্তা । তবুও এই জঙ্গলে এসে আত্মহত্যা করেন প্রতি বছর গড়ে ১০০ জন। অদ্ভুত রহস্যে ঘেরা এই জঙ্গলের নাম অওকিগাহারা। এটি জাপানের ফুজি পর্বতমালার উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ৩৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অওকিগাহারা অরণ্য বিশ্বে দ্বিতীয় আত্মহত্যার সংখ্যার বিচারে। আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন ব্রিজ প্রথম স্থানে রয়েছে। আসুন কিছু জরুরি তথ্য জেনে নেওয়া যাক এই রহস্যময় অরণ্য সম্পর্কে ।
জাপানের প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তির আত্মারা ঘুরে বেড়ায় এই জঙ্গলে। এখানে কোনও জীবিত ব্যক্তি এলে এই আত্মারা তাঁকে প্রভাবিত করে ।
শোনা যায়, স্থানীয় মানুষের মধ্যে এখানে এসে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যায় ১৯৬০ সালে সেইকো মাটসুমোটো নামের এক জাপানি লেখকের দুটি উপন্যাস ‘লিট’ ও ‘টাওয়ার অফ ওয়েবস’ প্রকাশের পর থেকেই । কারণ, পরিবার ও সন্তানের শুভ কামনায় এই বনে এসে আত্মহত্যা করেছিল এই উপন্যাসের দুটি চরিত্র।
শোনা যায়, উনবিংশ শতাব্দীতে এক অদ্ভুত রীতি পালিত হত এই এলাকায় ‘উবাসুতে’ নামে । এই রীতি অনুযায়ী এই জঙ্গলে এসে ছেড়ে চলে যেতেন মৃত্যু পথযাত্রী বৃদ্ধাদের তাঁদের পরিবারের লোকজন। এর পর এখানেই মৃত্যু হত তাঁদের। স্থানীয়দের মধ্যে এখনও অনেকে বিশ্বাস করেন, এখানে মৃত বৃদ্ধাদের আত্মারা এখনও এখানে ঘুরে বেড়ান।
১৯৮৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতি বছর ১০০ জন এই জঙ্গলে এসে আত্মহত্যা করেছেন। ২০০২ সালে এই জঙ্গলে ৭৮টি মৃতদেহ পাওয়া যায়। ২০০৩ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০০-এ। ২০০৪-এ এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৮ জনে। এর পর থেকে স্থানীয় প্রশাসন মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করা বন্ধ করে দেয়।