এখন ভারত : ফের শোকাহত চলচ্চিত্র জগত। প্রয়াত হলেন অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড-সহ রাজ্যোর সংস্কৃতি মহল।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে অসুস্থতা বোধ করছিলেন তিনি। ওই অবস্থাতেই শুটিং করতে গিয়েছিলেন। শ্যুটিং চলাকালীন সেখানেই বারেবারে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অভিনেতা। শুটিং থেকে বাড়ি ফিরে আসেন। বারবার বমি করেন। পরিস্থিতির অবনতি হলেও হাসপাতালে যেতে চাননি। অসুস্থতা ক্রমশ বাড়তে থাকায় তাই বাড়িতেই চিকিৎসা শুরু হয়। রাত ১টা নাগাদ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অভিনেতা। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ঘটনায় শোকস্তব্ধ বিনোদন জগৎ। কয়েকদিন আগেই অভিনেতার জন্মদিন যায়। ১৯৬৪ সালের ৩ এপ্রিলে বরাহনগরে জন্মগ্রহণ করেন অভিষেক। আর ৫৭তম জন্মদিনের মাত্র তিন সপ্তাহ পরই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন তিনি।
একাধিক হিট বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন অভিষেক। ১৯৮৬ সালে তরুণ মজুমদারের ছবি পথভোলা দিয়ে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ তাঁর। প্রাণের চেয়েও প্রিয়, গীত সংগীত, তুফান, সুজন সখী, অমর প্রেমের মতো ছবিতে অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করেছেন তিনি। একক নায়ক হিসাবে বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। এর পাশাপাশি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। সম্প্রতি একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
এক সাক্ষাৎকারে অভিষেক বলেছিলেন, “আমার জীবনের সবচেয়ে বড় হিট ছবি অঞ্জন চৌধুরীর হাত ধরেই এসেছে। ‘গীতসংগীত’ আমার জীবনের অন্যতম ছবি যেখানে আমাকে একক নায়কের চরিত্রে দেখা গিয়েছে।’
তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে অভিনেত্রী শতাব্দী রায় জানান, “বেশ কিছুদিন ধরেই ভুগছিলেন অভিষেক। আমি তাঁকে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিই। আমি মেনে নিতে পারছি না যে অভিষেক দা আর নেই।’ আক্ষেপের সুরে শতাব্দী রায় আরও জানান, ‘আজ ওকে একটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে যে, কেন ও হাসপাতালে গেল না! এত জেদ কেন করল? কেন গেল না ও।”
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বহু সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। পরে বহু বিতর্কেও জড়ান তিনি। অতীতে একাধিকবার তিনি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে কেরিয়ার নষ্টের অভিযোগ তুলেছিলেন।
ঘনিষ্ট মহলে বরাবর তিনি বলতেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত শুটিং করে যেতে চাই। নিজের দেওয়া কথা যে এ ভাবে সত্যি করে তিনি অকালে চলে যাবেন তা হয়তো কেউই ভাবতে পারেননি।