এখন ভারত : মশা উৎপাদন করছে চীন৷ জেনে অবাক হচ্ছেন তো? চীনের একটি কারখানা প্রতি সপ্তাহে ২০ মিলিয়ন ভালো মশা তৈরি করে। তারপর এই মশাগুলোকে জঙ্গলসহ অন্যান্য জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হয়৷ এই মশার কাজ হল অন্যান্য মশার সঙ্গে যুদ্ধ করে রোগ প্রতিরোধ করা।
নিশ্চয় জানতে ইচ্ছে করছে, এই ভালো মশাগুলো কী? প্রকৃতপক্ষে এই ভাল মশা তাদের নিজস্ব উপায়ে রোগ বহনকারী মশার বৃদ্ধি বন্ধ করে। একটি গবেষণার পর চীন এই কাজ শুরু করেছে। চীনের দক্ষিণাঞ্চলের গুয়াংজুতে এই কারখানা রয়েছে৷ এখানে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২ কোটি মশা উৎপন্ন হয়। এই মশাগুলি আসলে উলবাচিয়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত হয়৷
এর আগে চিনে সান ইয়েট সেট ইউনিভার্সিটি এবং মিশিগান ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যদি ওলবাচিয়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত মশা তৈরি করা হয়, তাহলে তারা মহিলা মশাকে যথেষ্ট পরিমাণে বন্ধ্যা করে তুলতে পারে৷ কারণ স্ত্রী মশা রোগকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে পারে। যার জন্য ভালো মশার উৎপাদন শুরু হয়েছিল৷ এই ভালো মশাগুলিকে ওলবাচিয়া মশা বলা হয়। চীনের বিজ্ঞানীরা প্রথমে গুয়াংজুতে ভালো মশার প্রজনন করায়। তারপর তাদের জঙ্গলে বা এমন জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হয় যেখানে মশার আধিক্য রয়েছে। কারখানা-বংশোদ্ভূত মশা স্ত্রী মশার সঙ্গে মিশে তাদের প্রজজন ক্ষমতাকে নষ্ট করে। তারপর সেই এলাকায় মশা কমতে শুরু করে। এর ফলে রোগ প্রতিরোধ হয়। চীনের এই পদ্ধতিতে প্রথম পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্য পেয়েছে। যে এলাকায় এই মশা ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে অল্প সময়ের মধ্যে মশাবাহিত রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল। যার পর চীন এটিকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার শুরু করে।
এই চিনা মশা উৎপাদন কারখানাটি বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো। এটি ৩৫০০ বর্গ মিটারে বিস্তৃত। এখানে ৪টি বড়ো কর্মশালা রয়েছে। প্রতিটি কর্মশালায় প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫ মিলিয়ন মশা উৎপন্ন হয়। চীন ২০১৫ সাল থেকে এই কাজ করছে। আগে এই মশাগুলি শুধুমাত্র গুয়াংজু -এর জন্য প্রস্তুত করা হত৷ কারণ প্রতি বছর এখানে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। এখন এখানে মশা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে৷ তাই রোগও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এখন এই কারখানা থেকে মশা উৎপাদনের পর তাদের চীনের অন্যান্য এলাকায়ও পাঠানো হচ্ছে। এই মশাগুলি অনেক শব্দ করে৷ কিন্তু তারা একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে মারাও যায়। তাদের থেকে কোনওভাবেই রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা নেই। পাশাপাশি কারখানায় জন্ম নেওয়া সব মশা পুরুষ। ল্যাবে এসব মশার জিন পরিবর্তন করা হয়৷ চীনের এই প্রকল্প এতটাই সফল হয়েছে যে ব্রাজিলেও একই ধরনের কারখানা খুলতে চলেছে চীন৷